আওয়ামী
লীগের ওই সংসদ সদস্যের নামে মামলা করায় গ্রাম থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না
বলে অভিযোগ করেছেন রংপুর চিনিকলের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর মাদারপুরে
গির্জার মাঠ ও স্কুলে আশ্রয় নিয়ে থাকা সাঁওতালরা।
গাইবান্ধার
গোবিন্দগঞ্জে চিনিকল সংলগ্ন গ্রামটিতে শনিবার গিয়ে দেখা যায়, গির্জার
সামনের মাঠে কেউ কেউ কলাগাছের পাতা দিয়ে ছোট ছোট কুঠুরি বানিয়ে, আবার কেউবা
ত্রাণ হিসেবে পাওয়া তাঁবু টানিয়ে আশ্রয়স্থল বানিয়েছে। অনেকে থাকছেন
পরিত্যক্ত স্কুলঘরে খড় বিছিয়ে।
মাদারপুর
গ্রামের বার্নাবাস টুডু বলেন, “মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম দুটি ঘিরে রয়েছে
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের লোকজন। তাদের কাজ
সাঁওতালদের বাইরে যেতে বাধা দেওয়া ও অন্য কাউকে গ্রামে ঢুকতে না দেওয়া। ফলে
প্রায় এক মাস ধরে অবরুদ্ধ হয়ে আছি আমরা”।
তিনি জানান,
গত সোমবার উত্তরাঞ্চলজুড়ে ‘আদিবাসীদের’ ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশের অংশ হিসেবে
গাইবান্ধায় মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধা ও হুমকির পর থেকে সাঁওতালরা ভয় ও
আতঙ্কে রয়েছে।
সাঁওতালদের অভিযোগ, মামলার অভিযোগ থেকে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের নাম প্রত্যাহারের জন্য নানারকম চাপ দেওয়া হচ্ছে তাদের।
সাঁওতালদের
মামলার ওই আবেদন থেকে আওয়ামী লীগের ওই সংসদ সদস্যের নাম প্রত্যাহারের
দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হতে দেখা যায় গোবিন্দগঞ্জে।
মাদারপুর
গ্রামের বাসিন্দা রুমিলা কিসকু বলেন, “আমাদের ওই দিকে (ইক্ষু খামার) যাইতে
দেয় না। গত ২৯ দিনেও আমরা ওই দিকে যাইতে পারি নাই। আপনারা আসছেন বলে এইখানে
(মাঠের পাশে) দাঁড়াইতে দিছে। না হলে গালি দিয়ে সরাই দিত।”
রুমিলা
কিসকু উচ্ছেদের জন্য চিনিকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশকেও দায়ী করেন,
“পুলিশেরাই আমাদের গুলি করছে। আগুন জ্বালায়া দিছে। যখন আগুন লাগে, তখন আমি
এখানে দাঁড়ায়া দেখতেছিলাম। প্রশাসনের লোকেরা এবং পুলিশ প্রথমে আগুন দেয়,
পরে গুলি চালায়।”
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
সাঁওতালদের
চলাচলে বাধার অভিযোগের বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার
বলেন, “চলাচলে কোনো বাধা নেই। এ ধরনের কোনো অভিযোগও আমার জানা নেই।”
জাতীয়
আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র সরেন বলেন, "গত ২৬ নভেম্বর ক্ষতিগ্রস্ত
সাঁওতালদের পক্ষে থোমাস হেমরম বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিলের
পর থেকে দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ থেকে এমপির নাম
প্রত্যাহারের দাবিতে গোবিন্দগঞ্জে এমপির লোকজনরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন
করার পাশাপাশি সাঁওতালদের হুমকি দিচ্ছে।”
0 comments:
Post a Comment