Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন

যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা ও সফল নেতৃত্ব একই সূত্রে গাঁথা। নেতৃত্ব যেকোনো দল, প্রতিষ্ঠান ও যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এ-সম্পর্কিত ধারণা ও প্রত্যাশা একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের কাজের প্রকৃতিভেদে ভিন্নতর হওয়াই স্বাভাবিক। তবে নেতৃত্বের মধ্যে কিছু সাধারণ মানবীয় গুণ বা সক্ষমতার অভিন্ন সমাবেশ সাধারণভাবে কাম্য। এ লেখাটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে, যা বিশেষ করে ব্যাংক-নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনার একটি প্রচেষ্টা। শীর্ষ নেতৃত্ব একটি প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে এবং লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। আদর্শগতভাবে শীর্ষ নেতৃত্ব এককভাবে বা দলগতভাবে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করবে এবং যা স্বল্পমেয়াদি নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য সামনে রাখবে এবং টেকসই হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদকে উত্সাহিত ও প্রেরণা প্রদানের বিকল্প নেই। যথোপযুক্ত প্রেষণা বিভিন্ন পর্যায়ে ছোট ছোট নেতৃত্বের বিকাশের মধ্য দিয়ে একটি কার্যকরী ‘নেতৃত্ব পরিমণ্ডল’ তৈরি করবে।
একজন নেতার মধ্যে অনেক মানবীয় গুণ যেমন— সততা ও নিষ্ঠা, আত্মবিশ্বাস, কর্মনিষ্ঠা, দূরদর্শিতা, উদারতা ও সৃজনশীলতা আমরা খুঁজি। একজন নেতার অনুসারী হিসেবে আমার মধ্যে যা নেই, তাও প্রত্যাশা করি নেতার মাঝে। এটাই স্বাভাবিক। একজন সফল নেতা ভালো কাজের মূল্যায়ন করেন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা অধীনস্তদের মাঝে ভাগ করে নেন। প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উত্সাহ ও প্রেষণার পাশাপাশি একজন যোগ্য নেতা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে কখনো কখনো কঠোর হবেন— এমনটাই কাম্য। যেকোনো সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রতিষ্ঠান বা তার জনবলের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্য নিহিত থাকলে তা নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে বিশ্বস্ত করে তোলে।
একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অবশ্যই সমস্যা, বাধা, উত্থান-পতন ও মন্দা আসবে। এ সময়কালই একটি নেতৃত্বের যোগ্যতার পরীক্ষার সময়। কার্যকরী নেতৃত্ব এহেন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানকে সচল রেখে লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করে।
যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি সহযোগী, অধীনস্ত বা অনুসারীদের পর্যাপ্ত উত্সাহ ও প্রেষণার উত্স হিসেবে কাজ করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সহযোগীদের মতামত গ্রহণ ও তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। অধীনস্তদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার প্রদান করতে হয়, যা তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধের জন্ম দেয় এবং প্রতিষ্ঠানকে নিজের করে ভাবার সুযোগ করে দেয়। একজন সফল নেতা অধীনস্তদের দায়ভার নিজের কাঁধে নেয়ার মানসিকতা ধারণ করেন। সহযোগী বা অনুসারীদের অগ্রগতিতে আনন্দিত হন এবং ভবিষ্যত্ প্রজন্মের মাঝে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করেন। অর্থাত্ সফল নেতৃত্ব পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে যোগ্য নেতৃত্বের উত্থানের জন্য চারণভূমি তৈরি করে। ভবিষ্যত্ প্রজন্মের নেতৃত্ব বর্তমানকে ছাড়িয়ে যাবে— এটাই স্বাভাবিক ও কাম্য। যে নেতৃত্ব উত্তরসূরি তৈরি করতে ব্যর্থ, সে নেতৃত্ব অন্তত নেতৃত্বের মাপকাঠিতে সফল বলে গণ্য হওয়ার কারণ নেই বলে মনে করি।

Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment