মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামের খোলা আকাশের নিচে, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতালদের। হামলায় আহতদের অবস্থা আরো সঙ্গীন। ৩৩ জনের নামে মামলা হলেও মাত্র একজন আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাঁওতালরা।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জে রংপুর চিনিকলের আখের খামারের জায়গায় গেল বছরের ৬ই নভেম্বর আখের বীজ কাটতে গেলে শ্রমিকদের বাধা দেয় সেখানকার বাসিন্দা সাঁওতালরা। শ্রমিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের।
এর জের ধরে ওইদিনই সন্ধ্যার আগে পুলিশের সহায়তায় আরো লোকজন নিয়ে সাঁওতালপল্লী উচ্ছেদে নামে মিল কর্তৃপক্ষ।
কয়েকদফা গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে খামার এলাকা। আগুন দেয়া হয় শতাধিক ঘরে। চালানো হয় ব্যাপক লুটপাট। বসতি রক্ষায় তীর-ধনুক নিয়ে প্রতিরোধে নামে সাঁওতালরাও। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় দুই সাঁওতাল। আহত হয় অন্তত ২০ জন। পরদিন হাসপাতালে মারা যায় তাদের একজন। সেদিন আহতদের অনেকেই এখন পঙ্গু হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন।
এ ঘটনায় প্রথমে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ৪২ জন সাঁওতালের নাম উল্লেখ করে ৪০০ জনকে আসামী করে মামলা করে পুলিশ। আহত অবস্থায় গ্রেপ্তারও করা হয় কয়েকজনকে।
আর সাঁওতালদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয় ৩৩ জনের নামে। মামলায় এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পিবিআই।
সাঁওতালদের ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে রংপুর ডিআইজির তদন্ত প্রতিবেদনে। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসআই মাহবুবুর রহমান ও কনস্টেবল সাজ্জাদ হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়। প্রত্যাহার করা হয় ৫৮ পুলিশ সদস্যকে।
পিবিআই'র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন মিয়া জানান, সাঁওতালপল্লীতে হামলার ঘটনায় সাক্ষ্য প্রমাণ নেয়া চলছে।
সাঁওতালরা বিকল্প কোনো জায়গায় নয়, বাপ-দাদার ভিটাতেই ফিরতে চান।
0 comments:
Post a Comment