Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

পার্বতীপুরে সাওতাল পল্লীতে সংঘর্ষ : তীরবিদ্ধ হয়ে যুবক নিহতের ঘটনায় আটক ১৯


উপজেলা করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
 পার্বতীপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের পার্বতীপুরে জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় তীর বিদ্ধ হয়ে যুবক নিহতের ঘটনায় ১৯ জনকে আটক করেছে পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশ।
 
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধরা হাবিবপুর চিড়াকুঠা গ্রামে সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সাতটি বাড়ির ঘরের চালা পুড়ে গেছে। এছাড়া, ৩০টি সাঁওতাল বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ সাঁওতালদের।


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অস্থায়ী ক্যাম্প করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
 
শনিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন এলাকায় গিয়ে পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের হাবিবপুর চিড়াকুঠা সাঁওতাল পল্লীতে ৮০টি আদিবাসি সাঁওতাল পরিবারের বাস। এর মধ্যে মোসেফ টুডুসহ ২০/২৫টি সাঁওতাল পরিবারের সঙ্গে প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী অসুলকোট শালাইপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের লোকদের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল।
 
শনিবার সকালে জহুরুল ইসলাম ও তার ছেলে সোহাগ বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান রোপনের জন্য শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছিলেন। এ সময় মোসেফ টুডুর নেতৃত্বে সাঁওতালদের একটি দল এসে বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষে হাতাহাতি শুরু হয়। 
 
এক পর্যায়ে কয়েকজন সাঁওতাল তীর ধনুক নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করে। সাঁওতালদের ছোড়া তিনটি তীর সোহাগের বুকে, পিঠে ও হাতে বিদ্ধ হলে ঘটনা স্থলেই তিনি মারা যান।  

এ সময় ছেলেকে বাচাঁতে গিয়ে বাবা জহুরুল হক আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ (দিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। 
 
এ ঘটনার পরপরই সাঁওতাল পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
 
এদিকে, সোহাগ নিহতের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অসুলকোট শালাইপুর ও লালমাটি গ্রামের কয়েকশ বিক্ষুব্ধ লোক সকাল ১১টার দিকে হাবিবপুর চিড়াকুঠা গ্রামে সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা করে। 
 
এ সময় কয়েকটি ঘরে চালায় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। আগুনে মোসেফ টুডু, বান্না টুডু, জোসেফ টুডু, হাইজ টুডুসহ সাতটি বাড়ির ঘরের চালা পুড়ে যায়। 
 
এছাড়া কমপক্ষে ৩০টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর সহ ধান, চাল, শেলাই মেশিন, শ্যালো মেশিন, মোটরসাইকেল, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, থালা, বাসন, টিউবওয়েল এবং গরু লুট করে দিয়ে যায় বলে সাঁওতাল পরিবারের নারী সদস্যরা অভিযোগ করেছে। 
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- এতে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবিন্দ্রনাথ সরেন মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে জানান।
 
খবর পেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে দিনাজপুর ও ফুলবাড়ী থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা এসে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ জন সাঁওতালকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
 
এদিকে, নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
 
বিকেল ৩টার দিকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শামিম আল রাজি, পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহেনুল ইসলাম, পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  
জেলা প্রশাসক শামিম আল রাজি ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতাল পরিবারগুলোর নারী সদস্যদের ক্ষতিপুরণের আশ্বাস দেন এবং শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান।
 
বর্তমানে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
 
পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল আলম বাংলানিউজকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
 ** তীরবিদ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
 Source: http://www.banglanews24.com/beta/index.php/fullnews/bn/360839.html










Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment