Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

রাষ্ট্র এখন নিজেই আইন মানছে না'-ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া

বর্ষ ৯ সংখ্যা ২৪    ৩০শে কার্তিক, ১৪২৩   ২৪ নভেম্বর, ২০১৬


২৪ নভেম্বর, ২০১৬ 
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া। ১৯৯৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক পাস করেন। ২০০১ সাল থেকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ লাভ করেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের নর্দামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ এবং ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে ‘ব্যারিস্টার এট ল’ সম্পন্ন করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি ‘নিউ সাউথ ওয়েলস সুপ্রিমকোর্ট’ বারের সদস্য হন।
আইন পেশার পাশাপাশি তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী ও ফ্যামিনিস্ট অ্যাকটিভিস্ট। গবেষণা করছেন সমতালের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিয়ে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লী উচ্ছেদ ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হন সাপ্তাহিক-এর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু

সাপ্তাহিক :  গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লী পুড়ল। সাঁওতালদের দখলকৃত জমি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। আপনি আগে থেকেই এ পল্লীর আদিবাসীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জমির মালিকানা নিয়ে আসলে কী ঘটছে সেখানে?  
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : সাঁওতালপল্লীতে ৬ নভেম্বর ২০১৬-এর ঘটনা আলোচনা এবং বোঝার আগে একটু পেছনে ফেরা দরকার বলে মনে করি।
মূলত ওই জায়গায় প্রথমে ১৫টি আদিবাসী পল্লী ছিল। এ নিয়ে সন্দেহ থাকলে বুঝতে হবে আপনার ইতিহাস জ্ঞান খুবই দুর্বল। ওই এলাকাটি ছিল একেবারেই জঙ্গল। জঙ্গল কেটে আবাদি জমি তৈরি করার পেছনেই ছিল আদিবাসী সাঁওতালরা।
আর এ কারণেই তাদেরকে ভূমিপুত্র বলা হয়। ভূমিপুত্র বলা তো শুধু বিশেষণ দেয়া নয়, এর পেছনে লম্বা ইতিহাস আছে। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তাদের এখানে আনা হয়, বিশেষত চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে। ব্রিটিশরা নানা প্রলোভন দেখিয়েই তাদেরকে এখানে আনেন।
 দেখবেন প্রতিটি চা বাগানেই চাষাবাদের কিছু জমি থাকে। এটি অতিরিক্ত। তাদের মজুরি হিসেবেই বিবেচিত হয়।
চা বাগানের জন্য আনা হলেও সবাইকে তো আর চা চাষে ব্যবহার করা হয়নি। উত্তরাঞ্চলের জয়পুরহাট, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, নওগাঁ আজ যে আবাদযোগ্য ভূমি, তা তৈরির পেছনেই ছিল সমতলের এই আদিবাসীরা।
জঙ্গলে কাজ করাতে হলে বিশেষ কিছু সুবিধাও দিতে হয়। কারণ চাইলেই একজনকে বাইরে থেকে নিয়ে আপনি জঙ্গলে কাজ করাতে পারবেন না। যারা জঙ্গলে কাজ করেন, তাদেরকে তিন একর করে জমি দেয়ার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে কাগজপত্রও রয়েছে। ব্রিটিশরা এই পদ্ধতিতেই তাদের সেটেলমেন্ট চালিয়ে গেছেন।
সাপ্তাহিক : গোবিন্দগঞ্জে কি একই কাঠামো?
জ্যোতির্ময় বড়ৃয়া : অনেকেই বলছেন, এটি নাকি সাঁওতালদের জায়গা না। আমি প্রথমেই তা খারিজ করে দিচ্ছি। আমি মনে করি, এই কথার মধ্যে এক ধরনের অশিক্ষা আছে। ইতিহাসে জ্ঞান না থাকার কারণেই এমন কথা বলা যায়। গোবিন্দগঞ্জের ১৫টি সাঁওতাল গ্রাম ছিল, এটি প্রমাণিত। হয়তো আজকের কাঠামোর মতো গ্রাম নাও হতে পারে। এখানে আরও ৩টি বাঙালি গ্রাম ছিল।
এই ১৮টি গ্রাম উচ্ছেদ করে তখন আখ চাষের জন্য রিক্যুজিশন করা হয়।
সাপ্তাহিক : এটি কোন সময়কার কথা?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : ১৯৪৮ সালের একটি আইন আছে। এর নাম হচ্ছে, দ্যা ইমার্জেন্সি রিক্যুজিশন অব প্রপার্টি অ্যাক্ট ১৯৪৮।  এই আইন বলে ১৯৫৫ সালের দিকে এখানে ভূমি রিক্যুজিশন শুরু হয় এবং ১৯৬২ সালের দিকে রংপুর মহিমাগঞ্জ চিনিকল উৎপাদনে যায়। শুরু থেকে উৎপাদনে যেতে ছয়-সাত বছর সময় লেগে গেল। এরপর পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন শুরু হলো। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের আগেই পাকিস্তান সরকার বুঝতে পারল যে এখানে আর টেকা যাবে না।
চালু হওয়ার পাঁচ বছরের মাথাতেই কারখানার কার্যক্রম গোটাতে শুরু করে। পেছনের কথা বলছি। আখক্ষেতে সেচের জন্য পাম্প ছিল। প্রায় ৭০০’র মতো পাম্প খুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানিরা।
এরপর তো যুদ্ধই শুরু হলো। যুদ্ধের পর আদমজী পাট কলের যে অবস্থা হলো, চিনিকলগুলোরও একই অবস্থা হলো। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এটি পরিত্যক্তই থাকল। ১৯৭৩ সালের পর এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হতে থাকল।
চিনিকলগুলোকে খাদ্যশিল্পের অধীনে এনে উৎপাদনও গেল। তবে যে ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে জাতীয়করণ শুরু হলো, তাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে স্থবিরতা নেমে এলো।
তবে আশির দশকের শুরুতে কারখানাগুলোতে ধীরে ধীরে গতি ফিরতে শুরু করল। এরপর থেকেই চিনিকলগুলো ধীরে ধীরে আবারও উৎপাদনে যেতে থাকে।
এরপর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। উন্নয়নের বিশেষ ধারা আমরা এই সময় দেখতে পাই। বিশেষ করে গ্রামেগঞ্জের যাতায়াত ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আসতে থাকে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে শিল্প-কারখানাগুলোও ভালো করতে থাকে।
’৯০-এ রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও এসব শিল্প-কারখানার অবস্থা খারাপ হতে থাকল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে রংপুর মহিমাগঞ্জ চিনিকলের কার্যক্রম স্থগিত (লে অফ) ঘোষণা করা হয়। লে অফ ঘোষণার সময় নিয়মিত শ্রমিকদের পাশাপাশি অনিয়মিত শ্রমিকদেরও ছাঁটাই করা হয়।
 লে অফ মানেই তো মিল বন্ধ করে দেয়া। বিজ্ঞপ্তির মধ্যেই বলা আছে মিল বন্ধ করা হচ্ছে এবং লে অফ ঘোষণা করা হচ্ছে।
সুতরাং এ কথা বলার অন্য কোনো উপায় নেই যে, এখানে মিল চালু ছিল। মিল তো আসলে চলছিলই না। চার-পাঁচ বছর পর হয়তো এটি আবার একটু একটু করে ঘুরতে শুরু করে।
কিন্তু আগের চার-পাঁচ বছর মিলের ম্যানেজার কোথায় ছিলেন? তিনি কি চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন?
সাপ্তাহিক : তার মানে এই সময় এখানে আখ চাষও বন্ধ থাকল?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে মোট ২১৯ একর জমিতে আখ চাষ করা হয় বলে রেকর্ড আছে।
তবে এখানে একটি ফাঁক আছে। এই ২১৯ একর জমিতে যে আখ চাষ করা হয়, তা এই মিলের জন্য কিনা সেটি কথায় বলা হয়নি। সেতাবগঞ্জ এবং জয়পুরহাটে দুটি বড় চিনিকল রয়েছে এবং এখানকার আখ সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে মাঝখানে যখন জমিগুলোতে আখ চাষ হচ্ছিল না, তখন এখানে কী হতো? মিল চলেছে, অনিয়মিত চলেছে, বন্ধ থেকেছে, লে অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়গুলোতে জমির কী অবস্থা ছিল? কারা এই জমি ভোগ করত? সেগুলো কি পড়ে ছিল?
সাপ্তাহিক : কী হয়েছে সেখানে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : জমি পতিত ছিল না। মিলের ম্যানেজার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মিলে এই জমি ভোগদখল করতে থাকে। ১৮৪২ একর জমির পুরোটাই মিলের ম্যানেজার এবং স্থানীয় নেতারা জমিদারি স্টাইলে পরিচালনা করে।
এই মিলের জমির পাশেই শাজাহান আলীর নামের একজন নিজ জমির দলিল ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে আখ খামারের জমির দলিলের সন্ধান পায়। তার নিজেরও কিছু জমি খামারের জন্য রিক্যুজিশন করা হয়। এরপর তার আইনজীবীরা বলে, যেহেতু সেখানে কোনো আখ চাষ হচ্ছে না, তোমরা অবশ্যই এই জমি ফেরত পাবে।
লিজ চুক্তির ৫নং শর্তে বলা আছে, যদি এই জমিতে আখ চাষ না করা হয় তাহলে এই জমি কী করা হবে? আখ চাষ না হলে মিল কর্তৃপক্ষ এই জমি সরকারের কাছে ফেরত দেবে। সরকার পরবর্তীতে এই জমি রিলিজ এবং রিস্টোর করবে।
প্রশ্ন হচ্ছে রিলিজ এবং রিস্টোর করবে কার কাছে? অবশ্যই জমির পূর্বের মালিকের কাছে। কারণ আইনটা ইক্যুজিশন না, এটি হচ্ছে রিক্যুজিশন।
সাপ্তাহিক : সাঁওতালপল্লীর ওই ঘটনায় ইক্যুজিশন এবং রিক্যুজিশন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যদি ব্যাখ্যা করতেন?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : ইক্যুজিশন হচ্ছে বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তির ভূমি সরকার সরকারি কাজে নিয়ে নেয়া। সরকার যদি এই জমি ব্যবহার নাও করে তবুও এই জমির মালিক সরকার।
আর রিক্যুজিশন হচ্ছে সরকার বিশেষ কাজের জন্য ব্যক্তির ভূমি নিয়ে নিল। সেই কাজ শেষ না করা অথবা যদি আর চালু না করা হয় তাহলে ভূমির মালিকদের তা ফেরত দিতে হবে।
আরও পরিষ্কার করে বলি। অনেক সময় ব্যক্তির পরিবহন পুলিশ রিক্যুজিশন করে থাকে। বিশেষ অপারেশন বা পুলিশের পরিবহন সংকটের কারণে এটি হয়। রাষ্ট্রের কাজের জন্য ব্যক্তি তার পরিবহন দিয়ে থাকে। কিন্তু পুলিশের কাজ শেষ হলে নির্দিষ্ট সময় পরেই ওই ব্যক্তিকে পরিবহনটি ফেরত দিয়ে দেয়।
এটি বোঝার জন্য বিশেষ আইন পড়তে হয় না। ১৯৯৮ সালের আইন কিন্তু রিক্যুজিশন। ইক্যুজিশন নয়। সাঁওতালদের ভূমি রিক্যুজিশন আইন বলেই নেয়া হয়।
সাপ্তাহিক : ভূমি রিক্যুজিশন হওয়ার পর সাঁওতালরা কোথায় গেলেন?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : সাঁওতালদের বিরোধী পক্ষ বলছে যারা জমির দখল নিয়েছে, তারা স্থানীয় না। কিন্তু এ কথা বলছে না যে, তারা কক্সবাজার বা বরিশাল থেকে এসেছে।
দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নঁওগা থেকে তারা এখানে আসছে। উচ্ছেদ হওয়ার পর সবাই তো ভারতে চলে যায়নি। পাশের জেলাগুলোতেই তারা অবস্থান করতে থাকে। তারাই তো আসবে। রংপুর, বগুড়া, জয়পুরহাট বা দিনাজপুর থেকে গোবিন্দগঞ্জে আসতে এক দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
উচ্ছেদ হওয়ার পর তো তারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ১০০০ বা ৮০০ টাকা দেয়া হয়েছিল। তাতে কি এমন ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আবার ওই সময়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে নানা প্রশ্নও আছে, যা এই সময় বলতে চাইছি না।
সাপ্তাহিক : এখানকার সাঁওতালরা ভূমি উদ্ধারের জন্য সমবেত হতে থাকে কখন থেকে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : তারা সংগঠিত হচ্ছিল অনেকদিন থেকেই। সর্বশেষ ২০১৩ সাল থেকে তারা সংঘবদ্ধভাবে আন্দোলন শুরু করে। আমি মে ২০১৬ মাসে সেখানে গিয়েছিলাম। প্রায় ১০ হাজারের উপরে আদিবাসী পেয়েছি সেখানে।
সাপ্তাহিক : আপনি তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন কবে থেকে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : সমতলের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিয়ে আমি গবেষণা করছি। গবেষণার স্বার্থেই আমাকে সরেজমিনে যেতে হয়। দিনাজপুর, জয়পুরহাটেও আমার যাওয়া হয়।
মে মাসে আমি যখন গোবিন্দগঞ্জে গেলাম, তখন সেখানে প্রায় ১০ হাজার আদিবাসী সমবেত হলো। যেন জনসভা।
সাপ্তাহিক : এর আগে যোগাযোগ হয়নি?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। আমরা মার্চ ২০১৬ থেকেই জানতে পারছি, ভূমির অধিকার নিয়ে এখানে আন্দোলন দানা বাঁধছে। তাদের জন্য কাজ করা দরকার আমরাও বুঝতে পারছিলাম।
আমার ইন্টারেস্টের জায়গা থেকেই সেখানে যাওয়া এবং গিয়ে বুঝতে পারলাম যে, তাদের আইনি সহায়তা দিতে পারব।
এরপরেই তাদের কাছ থেকে জমির দলিলাদি চাইতে থাকি। কারণ আমি আইনজীবী হিসেবে আগে ডকুমেন্টের সন্ধান করব। রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে তো কাগজের কাজ হবে না।
সাপ্তাহিক : কিন্তু এমন দখলে তো রাজনৈতিক সমর্থনও গুরুত্বপূর্ণ?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, তা অবশ্যই। কিন্তু আমি তাদেরকে বলেছি, রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ আদালতে আনবে না। আমি বলেছি, তোমরা ভূমিহীন। তোমাদের জন্য সরকার প্রচলিত ধারায় এমনিতেই ভূমির সংস্থান করতে পারে।
তোমরা ভূমির অধিকার চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন কর।
সাপ্তাহিক : তা করেছে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ। সব জায়গাতেই তারা লেখালেখি করেছে। আমি বলার আগেই অনেক জায়গায় তারা দৌঁড়াদৌড়ি করেছে।
তারা ঢাকায় এসে প্রেসক্লাব, শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছে। এপ্রিল ২০১৬ মাসের ১০ তারিখে গাইবান্ধায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক মানববন্ধনও করে। গণমাধ্যমেও এসব কর্মসূচির খবর প্রকাশ পায়।
ভূমির দাবিতে এমন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। একটি ঢিল পর্যন্ত ছোড়েনি।
সাপ্তাহিক : সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : সরকার কোনো সাড়া দেয়নি, আমি তা বলব না। পাথর তো কিছুটা নড়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন চেয়েছে। জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দিয়েছে যে, সাঁওতালদের দাবির সত্যতা আছে। এই প্রতিবেদনও দেখাতে পারব আমি।
সাপ্তাহিক : কিন্তু জেলা প্রশাসক তো পরে অন্য প্রতিবেদন দিয়েছেন?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : এটিই আমাদের অবাক করেছে। যে জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দিলেন যে, সাঁওতালদের দাবির সত্যতা আছে, সেই জেলা প্রশাসকই আবার প্রতিবেদন দিল যে, এখানে ১৮৩২ একর জমি পরিত্যক্ত আছে, যেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা যাবে।
সাপ্তাহিক : কিন্তু জমি তো ১৮৪২ একর?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : এখানেও ঘাপলা আছে। ১৮৪২ থেকে ১৮৩২ একর বাদ দিলে বাকি থাকে মাত্র ১০ একর জমি।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ বলছে, ৬০০ একর জমিতে এবার আখ চাষ করা হয়েছে। অপরদিকে জেলা প্রশাসক মন্ত্রণায়লয়কে চিঠি দিয়ে বলছে, ১৮৩২ একর জমি পরিত্যক্ত রয়েছে। চলতি বছরের ১০ মে ওই চিঠি পাঠানো হয়। আমরা মুখে বলছি, তা নয়।
জেলা প্রশাসকের চিঠিতেও জমি পরিত্যক্ত বলা হয়েছে। তার মানে এখানে আখ চাষের কোনো কার্যক্রম নেই। চুক্তিতে বলা আছে আখ চাষ না করা হলে জমি মূল মালিকদের ফেরত দিতে হবে। জেলা প্রশাসকের দলিলেও তাই প্রমাণ করে। ১৯৪৮ সালের আইনে ১৯৫৫ সালে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়।
সাপ্তাহিক : এ সংক্রান্ত আইন তো পরে আরও হয়েছে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, ১৯৮২ সালে সর্বশেষ এ ব্যাপারে অর্ডিন্যান্স হয় এবং এখানেই চালাকি করা হয়েছে। ১৯৮২ সালের আইনের মাধ্যমে রিক্যুজিশন এবং ইক্যুজিশন এক করে ফেলল।
কিন্তু ১৯৪৮ সালের রিক্যুজিশন আইনটি ছিল জরুরি পরিস্থিতির জন্য।
সাপ্তাহিক : তাহলে জেলা প্রশাসক কি এই জমি পরিত্যক্ত বলে যে চিঠি দিলেন, তা ১৯৮২ সালের অর্ডিন্যান্সের ভিত্তিতে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : না। তিনি সম্পূর্ণ পৃথকভাবে মূল্যায়ন করে বেজা (ইঊতঅ) কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেন। এটি অনেক বড় বিষয় এবং ভিন্নভাবে বুঝতে হবে।
আগেই বলেছি, চিনিকলগুলো চলে আসল খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশনের অধীনে। খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরশেনের অধীনে থাকলে তো জমি পরিত্যক্ত থাকার কথা নয়। তাহলে ১৯৪৮ সালের আইনে যা আছে, সে অনুসারেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। কারণ আইনটি ১৯৮২ সালে হয়নি।
এখন জেলা প্রশাসক যদি বলে এখানে আখ চাষ হচ্ছে না, তাহলে তো প্রথমে চাকরি যাওয়া উচিত শিল্প সচিবের। কারণ সচিব বলছেন, চিনিকল চালু। যুদ্ধ হওয়া দরকার জেলা প্রশাসক এবং সচিবের মধ্যে।
 জেলা প্রশাসক অত্র এলাকার। তিনিই ভালো জানবেন। তার মানে লিজ চুক্তির ৫নং শর্ত অনুযায়ী জমি পরিত্যক্ত থাকলে মূল মালিককে ফেরত দেয়া হবে।
সাপ্তাহিক : আইন মোতাবেক তো আলোচনা করার যথেষ্ট সুযোগ ছিল?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, প্রভাবশালী মহল হলে সবাই আলোচনা করতে সম্মতি জ্ঞাপন করত। সাঁওতালরা প্রান্তিক বলেই হয়নি।
চলতি বছরের ২৭ জুলাই দৈনিক কালের কণ্ঠ রিপোর্ট করেছে দেশে ২৭ লাখ একর খাস জমি প্রভাবশালী মহলের দখলে। তার মানে যারা মারতে পারে তাদের সঙ্গে আপনি আলোচনা করতেও ভয় পান। রাষ্ট্রের শ্রেণি চরিত্র প্রকাশ পায় এখানেই। রাষ্ট্র সাঁওতালদের মানুষই মনে করেনি।
সাপ্তাহিক : ১ জুলাই ২০১৬ যখন সাঁওতালরা এখানে বসতি গড়ল তখন জেলা প্রশাসকের ভূমিকা কী ছিল?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : জেলা প্রশাসকের এক প্রকার নীরব সমর্থন ছিল। প্রমাণ না থাকলেও জানা গেছে, জেলা প্রশাসক নাকি সাঁওতালদের বলেছিলেন, তোমরা বসতি গড় আমি কোনো উচ্ছেদ অভিযান চালাব না।
সর্বশেষ উচ্ছেদ অভিযানের সময়ও জেলা প্রশাসকের দৃশ্যত কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি মিডিয়ায় পরিষ্কার করে বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে।’ দায় এড়ানোর জন্য তিনি বলতেই পারেন। কিন্তু তার বক্তব্যের তো গুরুত্ব আছে।
সাপ্তাহিক : আসলে ৬ নভেম্বর ২০১৬ কী ঘটেছিল?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, ৬ নভেম্বরের ঘটনা বলতে গিয়েই পেছনের এত কথা বলতে হলো।
আমরা এখন সাঁওতালপল্লী নিয়ে এত কথা বলছি কেন? বলছি, এখানে মানুষ হত্যা করা হলো, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হলো, যেখানে বসতি ছিল সেখানে ট্রাক্টর চালিয়ে দেয়া হলো বলেই।
প্রশাসন বলছে, সরকারি জমি। ভালো কথা। কিন্তু সরকারি জমিতেও তো উচ্ছেদ করার সিস্টেম আছে, আইন আছে।
উচ্ছেদের আগে নোটিশ করতে হয়। তাতে কাজ না হলে জেলা প্রশাসক দখলকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন নিয়ে মাইকিং করবেন। সরকার গণতান্ত্রিক হলে তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই অনুসরণ করবে।
সাপ্তাহিক : প্রশাসন বলছে, এখানেও আইন মোতাবেক উচ্ছেদ করা হয়েছে।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : কোনো প্রকার আইন মানা হয়নি। আদালতের কোনো নির্দেশনাও ছিল না। নোটিশও করা হয়নি।
র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি একেবারেই মাস্তানের মতো তিনটি গাড়ি নিয়ে গেলেন। গিয়েই গুলি করতে থাকলেন, লুটপাট করতে থাকলেন। ছবিতে সবই স্পষ্ট।
স্থানীয় সাংসদ বলছেন, তিনি ওইদিন ঢাকায় ছিলেন। কিন্তু ভিডিও ফুটেজে রয়েছে তিনি মাইকে ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘সব কয়টারে গুলি করে মারো।’ গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে।
সাংসদ হচ্ছেন জনপ্রতিনিধি। তিনি কোনো সরকারি লোক নন। অথচ তিনি গুলি করার নির্দেশ দিলেন। এই ঘটনায় রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে আইন বিভাগ এবং শাসন বিভাগ সরাসরি জড়িত। বিচার বিভাগের প্রসঙ্গ এখনও আসেনি। আইন বিভাগ এবং শাসন বিভাগ মিলে কাজটি করল।
তার মানে আইনি প্রক্রিয়া ব্যতীত গুলি করে, ঘরে আগুন দিয়ে এবং লুটপাট করে ফৌজদারি অপরাধ করা হলো। এই অপরাধে যুক্তদের বিভাগীয় শাস্তি দিয়েই আপনি মাফ পাবেন না, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে বিচার করতে হবে।
কিন্তু সে বিচারের ব্যবস্থা কই? কোথাও তো এ নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। আমাদের প্রশ্ন এখানেই। আমি ব্যক্তি পাগলামি করতেই পারি। কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান তো পাগলামি করতে পারে না। রাষ্ট্র এখানে এই পাগলামি করল কেন? সবাইকে এখন এই প্রশ্ন তুলে এগুতে হবে। কেন এভাবে নিপীড়ন করা হলো?
সাপ্তাহিক : আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দিয়েছিল সাঁওতালরা। তারাও হামলার শিকার হচ্ছিল।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : দেখুন, সেখানে কী হয়েছে সবই মিডিয়ায় বেরিয়ে আসছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তিন কী চারজন সাঁওতাল মারা গেল, অথচ পুলিশ কোনো মামলা করল না। আমি সেখানকার ওসিকে জিজ্ঞাসা করলাম, মামলা করলেন না কেন? তিনি বললেন, নিহতের পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি।
তার মানে ওই ওসি সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। ধরলাম, সেখানে পুলিশের গুলিতে কোনো সাঁওতাল মারা যায়নি। কিন্তু মৃত্যু তো হয়েছে। হত্যা মামলা না করে অপমৃত্যুর মামলা হওয়ার তো মেরিট রাখে।
ওই অভিযানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি চিনিকলের লোকজনও ছিল। সাংসদের মাস্তানরা ছিল, আশেপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষ এসে আগুন দিল, লুটপাট করল অথচ এর জন্য কোনোই মামলা হবে না।
পুলিশের কথাই যদি ঠিক হয়, তাহলে দুইজন তরতাজা মানুষ নিহত হলো, তার জন্য  কোনোই মামলা হবে না? পুলিশ কেন বাদী হয়ে মামলা করল না?
সাঁওতালরাও তো দেশের মানুষ। দেশে ১৭ লাখ একর জমি প্রভাবশালী মহলের দখলে রয়েছে। তাদের যদি উচ্ছেদ করতে না পারেন, তাদের যদি গুলি চালাতে না পারেন, তাহলে এখানে কেন গুলি চালাচ্ছেন?
কারণ, প্রান্তিক এই মানুষগুলো দুর্বল। বন্দুকের বিপরীতে বন্দুক ধরতে পারে না বলেই রাষ্ট্র যা ইচ্ছা তাই করবে? রাষ্ট্রের চরিত্র তো এটি হতে পারে না।
রাষ্ট্র এখন নিজেই আইন মানছে না। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রে আর কিছুই চলছে না। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো একচোখা। সাঁওতালপল্লীতে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ফৌজদারি অপরাধ করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রভাবশালীদের দালাল হিসেবে কাজ করছে।
রাষ্ট্রের এই আচরণ তো দীর্ঘকাল চলতে পারে না। সাঁওতালদের মালিকানা পরের কথা। আগের কথা হচ্ছে, রাষ্ট্র নিজেই কেন অপরাধ করছে?
বসতভিটার ওপর দিয়ে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা হলো। কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ ক্রাইম চিহ্ন দিয়ে রাখে। আর এখানে মানুষ মারা গেল। মামলা হচ্ছে, মামলা হবে। কারা গুলি করেছে, কারা হামলা করেছে আমি নাম ধরে ধরে বলতে পারব। কিন্তু এখন নাম বলছি না তদন্তের স্বার্থে।
কিন্তু এখন যে মামলা করতে যাবো বা তদন্ত করব সে আলামত কই? ক্রাইম চিহ্ন কই? এই আলামত কীভাবে নষ্ট করেন আপনি?
সাপ্তাহিক : এটিও তো অপরাধ?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : অবশ্যই এটি অপরাধ। এই অপরাধে মিলের ম্যানেজারকে অবশ্যই জেলে ঢোকানো উচিত। রক্তের দাগ শুকায়নি, অথচ তার ওপর দিয়ে ট্রাক্টর চালিয়ে দিল। আলামত নষ্ট করা তো ফৌজদারি অপরাধ।
এই অপরাধে মিল কর্তৃপক্ষকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন নিয়ে এখন আলোচনা জরুরি। সাঁওতালদের দিকে আর আঙ্গুল নয়, এবার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে আঙ্গুল তুলতে হবে।
সাঁওতালদের জমির মালিকানা ছিল কিনা, এই নোংরা আলোচনা আপাতত বন্ধ থাক। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যে অন্যায় করল, তা নিয়ে এখন আলোচনা করা জরুরি।
সাপ্তাহিক : এই ঘটনার শেষ পরিণতি কী হতে পারে?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : শুরুতেই বলেছি, তাদের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমি বারবার বলেছি, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আদালতে না আনাই ভালো। স্থানীয়ভাবেই মীমাংসা করার কথা ছিল। আইনজীবী হিসেবে আমি কখনই বলব না রাজনৈতিক বিষয় আদালতে এসে প্রতিষ্ঠা করুন।
সব বিষয় আদালতে আনতে হবে কেন? আপনার বাড়িতে কে কোন ঘরে থাকবেন, তা তো আদালত নির্ধারণ করে না। দেশটা তো বড় পরিবার। নিজেরা নিজেরা ঠিক করেন না কেন?
সাপ্তাহিক : রাজনীতির ওপর ভরসা রাখা যায়?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : ভরসা মেলে না বলেই তো গুলিতে আহত মানুষটিকেও হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখতে হয়। বারবার বলার পরেও হাতকড়া খুলে দেয়া হলো না। পুলিশ আইনে স্পষ্ট বলা আছে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে হাতকড়া পরানো যাবে না। বাধ্য হলাম, আদালতে রিট করতে। পরে খুলে দেওয়া হলো।
সাপ্তাহিক : সরকার সাঁওতালদের সহযোগিতার কথা বলছে। এটি কীভাবে দেখছেন?
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া : হ্যাঁ, সরকার পাশেই ১০ একর জমিতে পুনর্বাসন করার কথা বলছে। কিন্তু সহযোগিতা করার বলার ধরনটাও তো আপত্তিকর। অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা এভাবে হতে পারে না। মনে হচ্ছে, ভিক্ষা দেয়ার মতো।
শিল্প সচিব এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন, তা খুবই আপত্তিকর। ওই বক্তব্যের পর তার চাকরি থাকা উচিত নয়।
তিনি বলেছেন, ‘সাঁওতালদের একজন খাট থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। আরেকজন গ্রামে ঘুরতে ঘুরতে মারা গেছেন।’ এই কথা বলার পরেই তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল। জনগণের চাকর একজন সচিব কতটুকু উদ্ধত হলে এমন বক্তব্য দিতে পারেন!
রাষ্ট্রের যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়েছে বলেই এমন আচরণ করা যায়।
রাষ্ট্র, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেখানে কী করেছে, তার ব্যাখ্যা আগে রাষ্ট্রই দিক। কারণ অপরাধ তারাই করেছে। বলেছি, ব্যক্তি পাগল হতেই পারে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পাগল হলো কীভাবে? পুলিশ আমার নিরাপত্তারক্ষী। পুলিশ কীভাবে আমাকে গুলি করতে পারে?  

Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment