Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

পানছড়ির ৭২ সাঁওতাল পরিবারে দুর্দিন

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার তিনটি গ্রামের ৭২টি সাঁওতাল পরিবারে দুর্দিন চলছে। প্রতিটি পরিবারে গড়ে তিন-চারজন সদস্য রয়েছে। খেয়ে না-খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছে তারা। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তো দূরে থাক, সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা থেকেও বঞ্চিত তারা।
রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে সাঁওতালদের বিরাট একটি অংশ বাস করলেও পানছড়ির মঙ্গল সাঁওতাল কার্বারিপাড়ায় ১৮টি পরিবার, কানুংগোপাড়ার গুণ সাঁওতাল কার্বারিপাড়ায় ৩৬টি, লোগাং ইউনিয়নের রামদাস সাঁওতাল কার্বারিপাড়ায় ১৮টি পরিবার যুগ যুগ ধরে বাস করছে। সহজ-সরল নিরীহ প্রকৃতির এই আদিবাসীদের খোঁজ কেউ রাখে না।
উপজেলা সদরের এক থেকে তিন কিলোমিটারে মধ্যে গ্রাম তিনটি অবস্থিত। সম্প্রতি মঙ্গল ও গুণ সাঁওতাল কার্বারিপাড়ায় সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে স্বাস্থ্যসমঞ্চত শৌচাগার নেই। বিশুদ্ধ পানীয়জলের জন্য নেই কোন নলকূপ। কুয়া বা ঝরনার পানি পান করে তারা। অসুখ হলে স্থানীয় বৈদ্য ও কবিরাজই একমাত্র ভরসা তাদের। পাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, সর্দারের হুকুমেই চলে তাদের আইন-কানুন। গ্রামের সব আচার-বিচার সর্দারই করে থাকেন। থানা-পুলিশ ও আদালতের শরণাপন্ন হতে হয় না তাদের।
পানছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অসেতু বিকাশ চাকমা বলেন, গত বছর সব সাঁওতাল পরিবারকে ভিজিএফ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও তাদেরকে বিধবাভাতা, বৃদ্ধভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অবহেলিত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ, গ্রামে স্বাস্থ্যসমঞ্চত শৌচাগারসহ স্থায়ী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-08-09/news/280499

পানছড়ির সাঁওতালদের খবর নেয় না কেউ

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে সাঁওতাল শ্রমিকেরা রাঙামাটি এসেছিলেন রাস্তাঘাট নির্মাণের কাজে। তখন কিছু পরিবার নিজ এলাকায় না ফিরে থেকে গিয়েছিল সেখানেই। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ হওয়ায় রাঙামাটিতে বসবাসরত সাঁওতালদের একটা অংশ উদ্বাস্তু হয়ে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে এসে বসতি গড়ে তোলে। তবে এত বছরেও সাঁওতালরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন থেকে শুরু করে কোনো নাগরিক সুবিধা পাননি।
পানছড়ি উপজেলা সদর, কানুনগোপাড়া, রামদাস সাঁওতাল কার্বারিপাড়ায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ৮১ পরিবারের বসবাস। মুর্মু, টুডুং, কিসকু, হেমরং, মারেন্ডি, হাজদা, সরেন নামে সাতটি সাঁওতাল গোত্র আছে এখানে।
সম্প্রতি সরেজমিনে পানছড়ির কয়েকটি সাঁওতালপল্লিতে দেখা গেছে, সাত-আট বছরের শিশুরাও মা-বাবার সঙ্গে কাজে যাচ্ছে। এসব গ্রামে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, কুয়া বা ঝরনার পানিই একমাত্র ভরসা। দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, আমাশয়সহ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানালেন গ্রামবাসী। এই এলাকায় নেই স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। শিশুদের নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়া লেগেই থাকে। তবে অসুখ হলে ওঝা-বৈদ্যের কাছেই যান তাঁরা। কানুনগোপাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান) গুন সাঁওতাল বলেন, ‘আমরা এখানে রাস্তা তৈরির কাজ করতে এসেছি। নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে এলেও এখানে এসে সরকার থেকে কোনো জমিজমা পাইনি। আগে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাস্তা মেরামতের কাজে আমাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতো, আমরা এখন সেই সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি।’
লোগাং ইউনিয়নের রামদাস সাঁওতাল কার্বারিপাড়ার সুভাস সাঁওতাল বলেন, ‘বিগত ৪১ বছরে মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরিয়েছে হাতেগোনা কয়েকজন সাঁওতাল। দারিদ্র্যের কারণে পরিবারগুলো তাদের শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারে না।’
একই পাড়ার সম সাঁওতাল বলেন, ‘এখানকার ৯৫ শতাংশ সাঁওতালের কোনো জায়গাজমি নেই। তাই প্রতিদিন ভোরে কাজের সন্ধানে বের হতে হয়। কাজ না পেলে মাঝেমধ্যে উপোস থাকতে হয়।’ হাপনা সাঁওতাল বলেন, ‘সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত।
‘আমরা বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ—কিছুই পাই না।
‘গ্রামের লোকজনের স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানাও নেই। অসুখ হলেও কেউ হাসপাতালে যায় না।’ পানছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসেতু বিকাশ চাকমা বলেন, ‘অবহেলিত সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।’ পানছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা বলেন, ‘সাঁওতাল সম্প্রদায়ের স্থায়ী উন্নয়নের জন্য মাছের খামার ও মিশ্র ফল-বাগানের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।’

Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-01-02/news/185098

***********************************************

Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment