Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

সাঁওতালদের গরু-ছাগলসহ সর্বস্ব লুটপাট করেছে আ’লীগ এমপি!

স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহমেদের ইন্ধন গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি লুটপাট করা হয়েছে। চিনিকলের জমি দখল ও উচ্ছেদের পেছনে তাদের ইন্ধন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাঁওতাল নেতারা।
তাঁরা আরও বলেন, এই দুজনের ইন্ধনেই বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি লুটপাট করা হয়েছে। তাঁদের ওপর হামলার বিচার চান সাঁওতালরা।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গতকাল সকালে সাঁওতাল অধ্যুষিত গ্রাম মাদারপুরে এই গণশুনানির আয়োজন করে।কমিটির ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রথমে মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম পরিদর্শন করে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী এই দলের নেতৃত্ব দেন। পরিদর্শন শেষে নেতারা মাদারপুর গির্জার সামনে গণশুনানিতে বসেন। শুনানি চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের মধ্যে বক্তব্য দেন বারনা মুরমু, রিনা মারডি, রাফায়েল সরেন, বারমা টুডু প্রমুখ।
সাঁওতালদের বক্তব্য শোনার পর নেতারা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে সরকারকে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া নেতারা সাঁওতালদের কথা প্রতিবেদন আকারে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর কথাও জানান।
নির্মূল কমিটির ১৮ সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুল হুদা, কেন্দ্রীয় নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল ও সাংগঠনিক সম্পাদক বায়েজিদ আক্কাস, গাইবান্ধা জেলা শাখার আহ্বায়ক মাহমুদুল হক ও সদস্যসচিব আমিনুর জামান প্রমুখ।
গণশুনানি শেষে সাঁওতালরা চিনিকলের জমি তাঁদের ফেরত প্রদানের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। পরে নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২০০ কম্বল বিতরণ করেন।
ধান কাটা অনিশ্চিত: গতকাল বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুস সামাদ, পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম, চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আউয়াল ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হান্নান সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আউয়াল বললেন, যাঁরা ধান চাষ করেছেন, তাঁরাই যাতে ধান কাটতে পারেন, সেজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঁওতালদের ধান কাটার প্রস্তাব দেন। ধান কাটার খরচও দিতে চাওয়া হয়। কিন্তু সাঁওতালরা ধান কাটতে রাজি নন।
তিনি আরও বলেন, সাঁওতালদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। শেষপর্যন্ত সাঁওতালরা ধান না কাটলে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং আইনি প্রক্রিয়ায় তাঁদের ঘরে ধান তুলে দেওয়া হবে।
গতকাল দুপুরে ধান কাটার বিষয়ে সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামার ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটির সহসভাপতি ফিলিমন বাস্কে মুঠোফোনে বলেন, ‘ধান কাটার বিষয়টি নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলছে। আগামী বৃহস্পতিবার ধান কাটা হতে পারে।’
চলতি বছরের ১ জুলাই সাঁওতালরা সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারের জমি দখল করে বসবাস শুরু করে। ৬ নভেম্বর তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়। সাঁওতালরা খামারের মোট ১ হাজার ৮৪২ একর জমির মধ্যে প্রায় ১৩৫ একর জমিতে ধান চাষ করেন।
সাঁওতালদের মামলায় গ্রেপ্তার ১: সাঁওতালদের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত সোমবার রাতে সন্দেহভাজন আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তি হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাদারপুর গ্রামের সোহেল রানা (২৮)।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সরকার গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।
৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিরবিদ্ধ হয়েছেন নয়জন। গুলিবিদ্ধ হন চারজন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন সাঁওতাল নিহত হন। ঘটনার ১১ দিন পর সাঁওতালদের মামলা নেয় পুলিশ। স্বপন মুরমু বাদী হয়ে প্রায় ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে এ মামলা করেন।

নভেম্বর ২৩, ২০১৬

Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment