গাইবান্ধা প্রতিনিধি : ‘সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং আইন অনুযায়ী যাদের কাছ থেকে জমি নেওয়া হয়েছে, তাদের বা অন্য কোন ব্যক্তিকে ওই জমি আর ফেরৎ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে একমাত্র আদালত আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি সিদ্ধান্ত হয়, তবেই এর ব্যত্যয় ঘটতে পারে।’
জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে হামলার ঘটনায় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মিল কর্তৃপক্ষ যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে। রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন।
এসময় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম ও রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল বক্তব্য রাখেন।
এ সময় তারা লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ৬ নভেম্বর ইক্ষু খামারের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে। এতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সর্বসাধারণের নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানানো হয়। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়।
৬ নভেম্বর সাহেবগঞ্জ খামার এলাকায় কোন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি। সেইদিন (৬ নভেম্বর) মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা খামার এলাকায় আখের বীজ সংগ্রহের জন্য ইক্ষু কর্তন করতে গেলে আদিবাসীরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ইক্ষু ছিনিয়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যায়। সে সময় শতশত আদিবাসী তীর-ধনুক দিয়ে পুলিশ সদস্যের উপর হামলা চালায়। এতে ৮ জন পুলিশ সদস্য তীর বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এরপর সরকারি সম্পত্তি রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে উচ্ছৃঙ্খল আদিবাসীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য প্রথমে গ্যাসগান ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট এলাকায় বর্তমানে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত পুলিশ দিবারাত্রি নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে। উক্ত এলাকার আদিবাসীরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে নিরাপদ ও স্বাচ্ছ্যন্দে দৈনন্দিন কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সন্তানরা নির্বিঘ্নে স্কুলে যাতায়াত করছে ও সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।
তবে কিছু কিছু সাঁওতাল বিভিন্ন জেলার যেমন দিনাজপুর, রংপুর, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসে ফার্ম এলাকায় জমি পাবে বলে দাবি করছে। তারা মাদারপুর, সাহেবগঞ্জ এবং জয়পুর গ্রামে অবস্থান করছে। দিনের বেলায় মাদারপুর গির্জার সামনে অবস্থান করে। তদুপরি এদের মধ্যে অনেকের আবার পার্শ্ববর্তী গ্রামে বাড়িঘর রয়েছে। তারাও দিনের বেলায় এখানে এসে রান্না করে খাচ্ছে।
আরো উল্লেখ করা হয়, মাদারপুর এবং জয়পুর গ্রামে ৩১ জন গৃহহীন সাঁওতাল চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সমস্ত সাঁওতালদের সরকারি ১৪.২৬ একর জমির উপর ৪টি আশ্রয় প্রকল্পে পুনর্বাসিত করা হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/নভেম্বর ২০, ২০১৬)
http://bm.thereport24.com/article/173970/index.html
0 comments:
Post a Comment