Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

দেশে চালু আছে অনেক ভাষা, এ নিয়ে বিশেষ আয়োজন: সাঁওতালি

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান | তারিখ: ২০-০২-২০১৩
সাঁওতালি ভাষা অস্ট্রো-এশীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচ্য শাখার অন্তর্ভুক্ত। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল মিলিয়ে পৃথিবীতে ৫০ লাখ মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলে। বাংলাদেশের রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলায় দুই লাখের বেশি সাঁওতাল রয়েছে। সাঁওতালি ভাষার উপভাষা দুটি— নাহিলি ও করকু।
সাঁওতালি ভাষার ইতিহাস অতি প্রাচীন হলেও দীর্ঘদিন এই ভাষার কোনো বর্ণমালা ছিল না।
এর প্রথম লিখিত রূপ পাওয়া যায় খ্রিষ্টান মিশনারিদের উদ্যোগে, রোমান হরফে। ১৮৬৯ সালে ভারতের সাঁওতাল পরগনার লুথারিয়ান মিশনে স্থাপিত একটি ছাপাখানা থেকে সাঁওতাল ভাষার প্রথম ব্যাকরণ প্রকাশিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে রঘুনাথ মুর্মু ‘অলচিকি’ বা ‘ওলচিকি’ নামে সাঁওতালি লিপি উদ্ভাবন করেন। তাঁর সে লিপি সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। ভারতে এখন সাঁওতালি ভাষা দেবনাগরী লিপিতে লেখা হচ্ছে এবং তাতে বহু হিন্দি উপাদানের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। বাংলাদেশে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে রাজশাহী জেলার বর্ষাপাড়া গ্রামে বাংলা হরফে সাঁওতালি ভাষা শিক্ষাদানের জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বাংলা ও সাঁওতালি ভাষা স্বতন্ত্র ভাষা-পরিবারভুক্ত হলেও এই দুই ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সাঁওতালি ভাষা অলচিকি, বাংলা না রোমান লিপিতে লেখা হবে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। এ বিতর্কের রেশ অতি সম্প্রতি প্রথম আলোর উপসম্পাদকীয় পাতায়ও লক্ষ করা গেছে। বাংলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে অনেকে বাংলা লিপিতে সাঁওতালি লেখার পক্ষে। অনেকে আবার মনে করেন, বাংলায় সাঁওতালি ভাষা উচ্চারণের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। রোমান হরফে দীর্ঘদিন ধরে সাঁওতালি চর্চা হচ্ছে বলে রোমান লিপিই সংগত। প্রয়াত কবি শামসুর রাহমানের উপস্থিতিতে একবার এক সাঁওতালি ভদ্রমহিলা আমাকে বলেছিলেন, ‘বাংলা লিপিতে যখন সাঁওতালি ভাষা লেখা হয়, তখন আমাদের ভাষার মাধুর্য হারিয়ে যায়।’
সাঁওতালি ভাষায় মননশীল-সৃজনশীল দুই ধারাতেই বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। এ রকম কয়েকটি বইয়ের মধ্যে আছে: হাড়মাওয়াক আতো (উপন্যাস), মারে হাপড়ামকোয়াক কাথা (সমাজবিজ্ঞান), কাথা পাড়িয়ান (সাঁওতালি অভিধান)। সাঁওতাল ভাষার কবি সারদাপ্রসাদ কিসকু তাঁর ‘হুল সেরেঞ’ বা ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’ কবিতায় নিজেদের লড়াকু চরিত্রের কথা তুলে ধরেছেন। কবিতার কয়েকটি লাইন, ‘নুসৗসাবোনে, নওয়ারাবোন চেলে হঁ বাকো তেঙ্গোন/ খাঁটি গে বেন হুল গেয়া হো,/ খঁঅটি গে বোন হুল গেয়া হো/ দিশম দিশম দেশ মৗঞ্জহি পারগাণা/ নাতো নাতো মাপাঞ্জিকো/ দঃক বোন দানাংবোন বাংগো কো তেঙ্গোন,/ তবে দোবোন হুলগেয়া হো।’
এর বাংলা অনুবাদ, ‘আমরা নিজেরাই বাঁচব, কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াবে না,/ আমরা সত্যিই বিদ্রোহ করব,/ আমরা সত্যিই বিদ্রোহ করব/ দেশের মাঝি ও পরগণার/ গ্রামের মোড়লরা,/ আমাদের সর্বপ্রকারে সাহায্য করবে, কেউ পাশে দাঁড়াবে না,/ তবে আমরা নিশ্চয়ই বিদ্রোহ করব।’
Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-20/news/330646
*****************************************************************
Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment