Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

'আদিবাসী দিবস' পালনের প্রতিবাদ

পার্বত্য চট্টগ্রামে ছয় বাঙালি সংগঠনের সমাবেশ

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি,পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আদিবাসী দিবস পালনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৬টি বাঙালি সংগঠন। শনিবার বিকালে বনরূপা পেট্রোল পাম্প চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে বাঙালিরাই হচ্ছে আদিবাসী আর উপজাতীয়রা মোঙ্গলিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে এসে এই দেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদেরকে কখনোই আদিবাসী বলা যায় না। তারপরও সরকার তাদেরকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তারা ইউএনডিপিসহ জাতিসংঘের দালালী করতে নিজেদেরকে আদিবাসী হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই- এই কথাটি রাঙ্গামাটির চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী থাকা অবস্থায় স্বীকার করে গেছেন। তাহলে তারা আবার নতুন করে কেন আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করে দেশে বিতর্কের সৃষ্টি করছেন। বক্তারা কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের এই চক্রান্ত বন্ধ করার দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের সভাপতি পেয়ার আহমেদ, সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আবছার আলী, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভানেত্রী বেগম নুরজাহান, সেক্রেটারি মো: জামালউদ্দিন, পার্বত্য ছাত্র পরিষদের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম, সেক্রেটারি আলমগীর হোসেন, পার্বত্য ছাত্র ঐক্য জোটের সভাপতি উজ্জ্বল পাল প্রমুখ।

এছাড়া সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আল-আমিন ইমরান, সেক্রেটারি মো: ফয়সাল আলম ও বিভাগীয় ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক মো:আবদুল রাজ্জাক, ১০৯ নং সাপছড়ি মৌজাধীন মানিকছড়ি শাখা সংগঠনের নেতা মো: নুরুল ইসলাম সওদাগর, মো: ছগির আহমেদ, মো:জাহাঙ্গীর, পার্বত্য গণ-পরিষদের সহ-সভাপতি মো:আবদুল খালেক, হাজী আবদুল হক, কূটনৈতিক সচিব মো:আলমগীর কবির ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সহকারী পরামর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে লিখিতভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে মতামত দিয়েছেন, তা হলো- "The Country has some tribal population and there are no indigenous people"। এ কথার সাথে প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একমত পোষণ করেছেন। এ প্রেক্ষিতে উপজাতীয় সমপ্র্রদায়কে কোনো অবস্থাতেই যেন 'উপজাতি'র পরিবর্তে 'আদিবাসী' হিসাবে উল্লেখ না করা হয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে যে সকল এনজিও প্রতিষ্ঠান রয়েছে সে সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের উপর সতর্কতামূলক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং এটাই সরকারের নির্দেশ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ২০১১ সালের ২৬ জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদেরকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জানিয়ে দেন যে বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার উপজাতির লোকেরা আদিবাসী নয়। তারা 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী'। 'উপজাতিদেরকে' ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসাবে যেন সম্বোধন করা হয়। এরপরও উপজাতিরা দেশি ও বিদেশি ইন্ধনদাতাদের উস্কানি ও যোগসাজশে 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী' বা 'উপজাতি'র পরিবর্তে 'আদিবাসী' হিসাবে নিজেদের উল্লেখ করছে। তারা চাচ্ছে এ সব কর্মকাণ্ডের দ্বারা পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ঘোলাটে হোক। এ অঞ্চলকে পৃথক করার অজুহাত খুঁজছে তারা।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিষয়টি সংবিধান স্বীকৃত নয়, তারপরও সরকারের আদেশ-নির্দেশ অমান্য করে সংসদীয় ককাশের বরাতে নির্দ্বিধায় উপজাতিদের 'আদিবাসী' হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তি বাম রাজনীতিক রাশেদ খান মেনন। সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া 'আদিবাসী মেলা' উদ্বোধন করেছেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ছাড়াও অনেকে সরকারের আদেশ বা নির্দেশ মেনে চলার তোয়াক্কা করছে না। বিভিন্ন এনজিও সংস্থার নির্বাহী কর্মকর্তারা 'উপজাতির' পরিবর্তে 'আদিবাসী' বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান সরকারের আদেশ-নির্দেশ বা প্রজ্ঞাপনের তোয়াক্কা না করে 'আদিবাসী' স্বীকৃতির জন্য উঠে-পড়ে লেগেছেন। তাদের এধরনের কর্মকাণ্ড স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতি চরম হুমকিস্বরূপ। এমন অশুভ কর্মকাণ্ডের মহড়া যারা দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। ইউএনডিপি ও বিদেশি এনজিও সংস্থাগুলো 'আদিবাসী' বিষয়ক এই অপতত্পরতা বৃদ্ধির জন্য উপজাতিদের মদদ যোগাচ্ছে এবং অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে বলে বক্তারা দাবি করেন। এই অপতত্পরতা বন্ধের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় বলেও নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন। 'আদিবাসী' তত্পরতা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বিধায় আদিবাসী দিবস পালন থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভবিষ্যতে বিরত রাখার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান বাঙালি ছয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বক্তারা সম্প্রতি লংগদুর আটরগ ছড়া এলাকার ভাঙ্গামুরা নদী থেকে আলমগীর হোসেন নামে এক বোট চালকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার কথা উল্লেখ করেন এবং এ হত্যাকাণ্ডের জন্য উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের দায়ী করেন। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
Source: http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDhfMTFfMTRfMV8xMl8xXzE1MTk0Mw==
Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment