Place for Advertisement

Please Contact: spbjouralbd@gmail.com

জীবন যুদ্ধে বিজয়ী আদিবাসী নারী পিরিনা

বাংলাদেশের যেসব জেলায় আদিবাসী জনগণের বসবাস বেশি এমনি একটি উত্তরের আদিবাসী অধ্যাসিত জেলা হলো দিনাজপুর। দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলাধীন ছোট একটি আদিবাসী গ্রাম ডারকামারীতে দারিদ্র সীমার মধ্যে বসবাস করত রাবণ মুর্মু ও লুগিনা সরেন।
এই দম্পতির ঘরে দুই সন্তানের পরে ২০/০৩/১৯৯৬ ইং তারিখে তৃতীয় সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করে পিরিনা মুর্মু। এরপর আরও দুইটি সন্তান পরপর জন্ম নেয় রাবণ-লুগিনার ঘরে। অভাব অনটন যাদের নিত্যদিনের সঙ্গী তাই কখনও অর্ধাহারে আবার কখনও অনাহারে দিনতিপাত করিতে থাকে পিরিনা মুর্মু। পিরিনা লেখাপড়া শুরু করে ব্র্যাক স্কুলে একই সাথে খালিপপুর মিশন স্কুলে ভর্তি হয় যাতে করে দুপুরে খাবার খেতে পারে।

প্রথম শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করার জন্য বাড়িতে কোন বিদ্যুৎ ছিল না এবং কেরোসিন তেল কেনারও পয়সা ছিলনা তাদের। তাই বেশিরভাগ সময় দিনের আলোয় পড়াশোনা করতে হতো এবং মাঝে মাঝে কুপির আলোতে পড়াশোনা চালিয়ে যেত। পিরিনার ১০ বছর বয়সে তার বাবা মারা গেলে সংসারে আরও অভাব অনটন দেখা দেয়।
নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা এ জন্য সে মাঝে মাঝে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে আবাদি জমিতে কাজ করতে যেত, সেই সাথে কাজের জন্য পিরিনার এক ভাই এক বোন ৫ম শ্রেনীতে পড়ার সময় ঝড়ে পরে। কিন্তু পিরিনার লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় কোন ভাবেই যেন তাকে লেখাপড়া থেকে তাকে আলাদা করতে পারেনি।
এরই ধারাবাহিকতায় সে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাফল্যের সাথে জিপিএ ৩.৮৫ পেয়ে কৃতকার্য হয়। এমন সময় বে-সরকারী সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ প্রকল্পের সংলাপ কেন্দ্র চালু হলে উক্ত সংলাপ কেন্দ্রে পিরিনা মুর্মু কিশোরী হিসেবে ভর্তি হয়। এই প্রকল্পে কিশোরীদের জীবনের স্বপ্ন প্রতিষ্ঠিত এবং তাদেরকে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ায় উদ্বুদ্ধ করত। এতে কাজ করে যেতে পিরিনা মুর্মু তার একটি বড় স্বপ্নের কথা বলে যে সে অনেক বড় পুলিশ অফিসার হবে।
এভাবেই চলতে থাকে পিরিনার জীবন। এরই এক পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কিছু সংখ্যক নারী-পুরুষ নিয়োগ করা হবে এমন সংবাদ পেলে তার স্বপ্ন তাকে আরও তাড়িত করতে লাগে। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক পুলিশ লাইনে শারিরীক, লিখিত, মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে কৃতকার্য হয়ে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হয়। সাফল্যের সহিত ট্রেনিং শেষে সে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যোগদান করে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার রেবেকা সুলতানা জানান- পিরিনাকে  গত ৯ডিসেম্বর পিরিনাকে আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদ্যাপনে “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” এর আওতায় শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্যে অর্জনকারী নারী হিসেবে ক্রেস্ট ও সম্মাননা গ্রহণ করেন তার মা লুগিনা সরেন।
Source: https://dinajpurnews.com/115107.html
Share on Google Plus

About Santali Pạrsi

0 comments:

Post a Comment