আমাদের অর্থনীতি : 09.11.201৬
রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ
এলাকার ধানক্ষেত থেকে সোমবার রাতে আরও এক সাঁওতালের লাশ উদ্ধার করেছে
পুলিশ। তার নামপরিচয় জানা যায়নি। এর আগে রোববার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায়
গুলিবিদ্ধ সাঁওতাল শ্যামল হেমব্রম (৩৫) দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
মারা যান। এনিয়ে পুলিশ ও সাঁওতালদের সংঘর্ষে দুই সাঁওতাল নিহত হলো।
গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্র জানায়, স্থানীয় জনগণ সোমবার রাত দশটার
দিকে সাহেবগঞ্জ এলাকার ধানক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে
পাঠায়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সরকার গতকাল
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মুঠোফোনে বলেন, লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের
প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। ঘটনাটি তদন্ত করে
দেখা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষু খামার জমি উদ্ধার সংহতি কমিটির
সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কে গতকাল সকালে মুঠোফোনে বলেন, পুলিশের ছোড়া গুলিতে
আমাদের মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হয়। এরমধ্যে দুজন মারা গেছে। দুজনকে গ্রেফতার
করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের আরও চার থেকে পাঁচজনকে খুঁজে পাওয়া
যাচ্ছে না। তাদের গুম করা হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
গত রোববার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র
করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষে পুলিশসহ
উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে তীরবিদ্ধ হয়েছেন ৯ জন এবং
গুলিবিদ্ধ হন ৪ জন। এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক কল্যাণ চক্রবর্তী
বাদী হয়ে রোববার রাতে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাত
আসামি দেখিয়ে মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় গতকাল সকাল পর্যন্ত চারজনকে
গ্রেফতার করা হয়েছে।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল বলেন, চিনিকল ১৯৬২
সালে আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় এক হাজার ৮৪২ একর
জমি অধিগ্রহণ করে। তখন থেকে এসব জমিতে উৎপাদিত আখ চিনিকলে সরবরাহ করা
হচ্ছিল। কিন্তু দুই বছর আগে এসব জমি বাপ-দাদার দাবি করে আন্দোলনে নামে
সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন। আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা গত ১ জুলাই প্রায় ১০০
একর জমি দখলে নিয়ে একচালা ঘর নির্মাণ করে। রোববার চিনিকলের রোপণ করা আখ
বীজ হিসেবে সংগ্রহের জন্য কাটতে গেলে সাঁওতালরা বাধা দিলে এ ঘটনা ঘটে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, জমি অধিগ্রহণের সময় চুক্তিনামায় বলা হয়,
কখনো চিনিকল বা খামার বন্ধ হলে সেক্ষেত্রে ওইসব জমি সরকারের কাছে চলে যাবে।
অথচ এলাকার কতিপয় সুবিধাবাদী ব্যক্তির উস্কানিতে সাঁওতালরা অবৈধভাবে
চিনিকলের জমি দখল করে।
এ প্রসঙ্গে সংহতি কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, জমি অধিগ্রহণের
সময় জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি হয়, ওইসব জমিতে আখ ছাড়া অন্য ফসলের চাষ হলে
প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দিতে হবে। কিন্তু কিছুদিন ধরে ওইসব জমিতে ধান ও
তামাক চাষ হচ্ছে। অথচ জমি ফেরত দেওয়া হয়নি। তাই দখলের ঘটনা ঘটে। সম্পাদনা:
আনোয়ার
উৎস: http://amaderorthoneeti.net/new/2016/11/09/40347/#.WCKoJLkRM2w
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
0 comments:
Post a Comment